জামালপুরের মেলান্দহে সদ্য প্রকাশিত সহস্রাধিক এসএসসি পরিক্ষার্থীর রেজাল্ট শিটে ব্যাবহারিক নম্বর যোগ হয়নি। এতে দু’টি পরিক্ষা কেন্দ্রের ১৪টি স্কুলের মোট ১ হাজার ২শ’ ১৩ পরিক্ষার্থী-অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও বিপাকে পড়েছেন।
ময়মনসিংহ মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি পরিক্ষার সর্বশেষ ফলাফল ঘোষণায় চলমান পরিক্ষা পদ্ধতির গ্রেডিং-এ ওই সকল পরিক্ষার্থীদের নম্বরপত্রে ফেল দেখানো হচ্ছে।
২৮ নভেম্বর এসএসসি পরিক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর কয়েকজন পরিক্ষার্থীদের নম্বরপত্রে এই চিত্র ধরা পড়ে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে হাজরাবাড়ি এবং ভাবকী হাই স্কুল এই দু’টি কেন্দ্রের কোন পরিক্ষার্থীর খাতায় ব্যবহারিক নম্বর যোগ হয়নি।
এ বিষয়ে হাজরাবাড়ি হাই স্কুল কেন্দ্র সচিব আব্দুল মোতালেব বিএসসি এবং ভাবকী হাই স্কুলের কেন্দ্র সচিব মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করলে এই অসঙ্গতির কথা স্বীকারও করেন। উপজেলা প্রশাসন কিংবা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে বিষয়টি এখনো জানানো হয়নি। ফিজিক্যাল-হেলথ-ক্রীড়া বিষয়ে ১০০ এবং সদাচরণ বা শুদ্ধাচার বিষয়ে ৫০ সহ সর্বমোট ১৫০ নম্বর কোন পরিক্ষার্থীদের দেয়া হয়নি।
ভুক্তভোগি অভিভাবকদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম, হানিফ উদ্দিনসহ কয়েকজন হেড মাস্টার জানান-ব্যবহারিক নম্বর সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাত দিয়েই দেয়া হয়। পরিক্ষার্থীদের মার্কশিটে ব্যবহারিক নম্বর যোগ না হওয়া ফেল বোঝানো হয়। কেন এমনটা হলো তার কোন উত্তর মিলছে না।
এ ব্যাপারে শিক্ষক নেতা এবং মালঞ্চ এম.এ. গফুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন বিএসসি জানান-ব্যবহারিক নম্বর পরিক্ষার্থীদের পাওয়া ন্যায্যতা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি মুল্যায়নেরই বহিপ্রকাশ। কোন কারণে এই নম্বর যোগ না হলে; শিক্ষার্থীরা অন্য কোন কলেজে ভর্তিও হতে পারবে না। কর্মক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন হেড মাস্টার জানান-ইন্টারনেটে প্রকাশিত এমন ফলাফল পেয়ে পরিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের উপর চড়াও হয়েছে।
হাজরাবাড়ি হাই স্কুলের কেন্দ্র সচিব মোতালেব বিএসসি এবং ভাবকী হাই স্কুলের কেন্দ্র সচিব মিজানুর রহমান সার্ভার সমস্যাকে দায়ি করে বলেন-বোর্ডে যোগাযোগের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছি। সার্ভার সমস্যা থাকলে সরাসরি বোর্ডে নম্বর জমা না দেয়ার বিষয়ে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম মিঞা এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান জানান-বিষয়টি কেও অবগত করাননি। তারপরও খোঁজখবর নিচ্ছি। আজাদুর রহমান আরো জানান-এ ধরণের ফলাফল বিপর্যয়ের সংশোধনীও সময় এবং দুর্ভোগের। এ ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ময়মনসিংহ মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ডেপুটি কন্ট্রোলার অব এক্সামিনেশন এস.এম. মুবাশ্বির হোসাইন জানান-ব্যবহারিক এই নম্বর বোর্ডের কোন নির্ধারিত বিষয় নয়। এটি সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দেয়া। যদি এমন অসঙ্গতি হয়ে থাকে; তাহলে বিদ্যালয় কর্তৃক বোর্ড কন্ট্রোলার বরাবর আবেদন করতে হবে। বোর্ড কন্ট্রোলার যুক্তিসঙ্গত মনে করলে ফলাফল পূণ: বিবেচনা করতে পারেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।